১০ ফেব্রুয়ারি, ২০০৬
এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটে গেল গত ২৩ জানুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাটে। পল্লী বিদ্যুতের অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে পুলিশের নির্বিচার গুলিবর্ষণে প্রাণ হারায় ৮ জন নিরীহ মানুষ। তারপর থেকে ক্ষোভে ফেটে পড়ে কানসাট তথা এর আশপাশের সমস্ত মানুষ। বিক্ষোভে ফেটে পড়া মানুষ সেদিন পল্লী বিদ্যুতের পিলারে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল। সে আগুন ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত জ্বলতে দেখা গিয়েছে। আগুনের লেলিহান শিখায় তাদের আন্দোলন আরো শক্ত হয়ে দানা বাঁধে।
ঘটনার শুরু অবশ্য ২৩ জানুয়ারি নয়, তারও আগে। ৪ জানুয়ারি তারিখেও পুলিশ গুলি চালিয়ে ২ জনকে হত্যা করেছিল। বলা যায়, ক্ষোভের সূত্রপাত সেখান থেকে। অনিবার্যভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে উসকে দেয়া হয় সংঘর্ষের দিকে। এর দায় অবশ্যই প্রশাসন তথা সরকারকেই বহন করতে হবে।
এবার একটু দৃষ্টি দেয়া যাক আন্দোলনকারীদের দাবি-দাওয়ার দিকে। যতদূর জানা যায়, আন্দোলনকারীদের ক্ষোভ একদিনের নয়। দীর্ঘদিনের জমে থাকা ক্ষোভ ধীরে ধীরে পুঞ্জিভূত হচ্ছিল। কেনই বা এ আন্দোলন পল্লী বিদ্যুতের বিরুদ্ধে? এর উত্তরে যা জানা যায় তা হলো, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা (শিবগঞ্জের) দীর্ঘদিন ধরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ থেকে বঞ্চিত। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ৪-৫ ঘণ্টা তারা বিদ্যুৎ পেয়ে থাকেন। তাও আবার অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাত বারোটার পর থেকে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে না পারলেও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ন্যূনতম মাসিক চার্জ ঠিকই বৃদ্ধি করে। বর্তমানে ন্যূনতম মাসিক চার্জ ১০৫ টাকায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে যোগ করে মিটার ভাড়া প্রতিমাসে ১০ টাকা। অর্থাৎ গ্রাহকরা মিটার কিনে নিলেও এর জন্য প্রতি মাসে তাদের ১০ টাকা দেয়া লাগবে। এসব অনিয়ম এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ পেতে গ্রাহকরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল। কিন্তু তাদের প্রতিবাদের কোনো তোয়াক্কাই করেনি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। ফলস্বরূপ গ্রাহকরা গড়ে তোলেন পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি। যার আহ্বায়ক মনোনীত হন কানসাটের পুকুরিয়া গ্রামের গোলাম রাব্বানী। যিনি একসময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চেয়ারম্যান ছিলেন। এরপর কমিটির ব্যানারে প্রতিবাদ জানিয়ে আসতে থাকেন গ্রাহকরা।
৪ জানুয়ারি এরকমই প্রতিবাদ জানাতে পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ শেষে হাজার হাজার গ্রাহক বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি অফিসের সামনে যাবার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয় এবং তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে গ্রাহকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা সমিতি অফিস লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছুড়লে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে দু’জন নিহত হয় এবং আহত হয় শতাধিক।
দানা বেঁধে ওঠা ক্ষোভ সেদিনই বিক্ষোভে পরিণত হয় দু’জন মারা যাবার পর। কিন্তু কিছুদিন পর ঈদুল আজহা হওয়ায় সে বিক্ষোভ আর বেশিদূর এগোতে পারেনি এবং মিডিয়াতে এ নিয়েও বেশি হইচই হয়নি।
এরপরের ঘটনাগুলো মিডিয়ার কল্যাণে সকলেরই জানা। কাজেই নতুন করে আর বলার কিছু নেই। তবে কানসাটের ঘটনা একটা বিষয় প্রমাণ করে, সরকারের প্রশাসন তথা পুলিশের ঔদ্ধত্য এমন জায়গায় গিয়ে ঠেকেছে যে, এখন পুলিশ জনতার ওপর গুলি চালাতে ভয় পায় না। ৪ জানুয়ারি ২ জন এবং পরবর্তীতে ২৩ জানুয়ারি ৮ জনকে গুলি চালিয়ে হত্যা করলেও এ নিয়ে না প্রশাসনের, না সরকারের মাথাব্যথা লক্ষ করা যায়। সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকেও সেদিন ঘটনাস্থলে ছুটে যেতে দেখা যায়নি। দেখা যায়নি ঘটনা সম্পর্কে সরকারি কোনো বিবৃতি। সরকারের ভাবটা এমনই ছিল যেন কিছুই ঘটেনি। তবে স্থানীয় সরকার সমর্থকরা এ ঘটনাকে আরেকটি দলের ইন্ধনেই সৃষ্টি বলে চালাবার চেষ্টা করে। আর আন্দোলনকারীরা এ ঘটনার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যকেই দায়ী করে এবং তাঁর ফাঁসির দাবিতে শ্লোগান দিয়ে মিছিলও করে। কাজেই বোঝা যায়, সরকারে যারা আছেন তাঁরা এ ব্যাপারে কতটা আন্তরিক ছিলেন?
কানসাটের জনতা হয়তো এতটা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠতো না যদি পুলিশ পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে গিয়ে জনতাকে লক্ষ করে বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ (পুলিশ সুপারের বক্তব্য অনুযায়ী ১৫৪ রাউন্ড রাইফেলের গুলি এবং ১১টি টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছিল। পুলিশ সুপারের এ পরিসংখ্যানই বলে দেয় বাস্তবে কতটা গুলি ছোড়া হয়েছিল?) এবং নারী-শিশুর ওপর নির্বিচারে নির্যাতন না করতো। তাহলে পরিস্থিতি হয়তো এতটা ভয়াবহ হয়ে উঠতো না। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, পুলিশ কি করে সমিতি অফিস থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে গিয়ে শান্তিপূর্ণ মিছিলে গুলি চালাতে পারে?
বিদ্যুৎ সেক্টরের অবস্থা এ দেশের মানুষ অনেক আগে থেকেই অবগত। পিডিবিকে লস প্রজেক্ট দেখিয়ে একের পর এক বিদেশি কোম্পানির হাতে বিদ্যুতের দায়িত্ব তুলে দেয়া হয়েছে। সেসব কোম্পানি কতটা লাভজনক এক পল্লী বিদ্যুতের দিকে তাকালেই স্পষ্ট হয়। শোনা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎও লসের মধ্যে আছে। বলাবাহুল্য, লুটপাটের কারণেই এ লস। আর এ লস ঠেকাতে তারা বেছে নেয় তাদের গ্রাহকদের। এর বড় নমুনা মিটার কিনেও গ্রাহককে প্রতি মাসে মিটার ভাড়া দিতে বাধ্য করা। শুধু তাই নয়, কোনো কারণে মিটার নষ্ট হলে গ্রাহকের কাছ থেকে কয়েক গুণ বেশি টাকা আদায় করে নেয়া হয়।
কানসাট আন্দোলনের যবনিকাপাত ঘটেছে কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না। পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়কসহ তিনজনকে গ্রেফতার করার ঘটনা নিয়ে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত যা ঘটেছে, তার সবই পত্রিকাতে এসেছে। জনতার বিক্ষোভের মুখে ৩১ জানুয়ারি গ্রেফতারকৃত সকলকে মুক্তি দেয়া হয়। মুক্তির পরপরই কমিটির আহ্বায়ক গোলাম রাব্বানী বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকারে বলেছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
সাক্ষাৎকারে গোলাম রাব্বানী এও বলেছেন, তিনি জামিন পেয়ে জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। সরকার থেকে এক মাসের সময় নেয়া হয়েছে। অর্থাৎ ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সকল দাবি মেনে নেয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। প্রশ্ন করা যায়, গোলাম রাব্বানীসহ গ্রেফতারকৃতদের জামিন দিতে যদি ৯ দিন লেগে যায় সেখানে সকল দাবি-দাওয়া ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মেনে নেয়া হবে কীভাবে? এজন্য আমাদের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আমরা চাইবো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আন্দোলনকারীদের উল্লিখিত দাবি মেনে নেবেন। ওই দাবি না মেনে বা নানা টালবাহানা করে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ করে তোলা কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না।
ঘটনার শুরু অবশ্য ২৩ জানুয়ারি নয়, তারও আগে। ৪ জানুয়ারি তারিখেও পুলিশ গুলি চালিয়ে ২ জনকে হত্যা করেছিল। বলা যায়, ক্ষোভের সূত্রপাত সেখান থেকে। অনিবার্যভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে উসকে দেয়া হয় সংঘর্ষের দিকে। এর দায় অবশ্যই প্রশাসন তথা সরকারকেই বহন করতে হবে।
এবার একটু দৃষ্টি দেয়া যাক আন্দোলনকারীদের দাবি-দাওয়ার দিকে। যতদূর জানা যায়, আন্দোলনকারীদের ক্ষোভ একদিনের নয়। দীর্ঘদিনের জমে থাকা ক্ষোভ ধীরে ধীরে পুঞ্জিভূত হচ্ছিল। কেনই বা এ আন্দোলন পল্লী বিদ্যুতের বিরুদ্ধে? এর উত্তরে যা জানা যায় তা হলো, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা (শিবগঞ্জের) দীর্ঘদিন ধরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ থেকে বঞ্চিত। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ৪-৫ ঘণ্টা তারা বিদ্যুৎ পেয়ে থাকেন। তাও আবার অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাত বারোটার পর থেকে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে না পারলেও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ন্যূনতম মাসিক চার্জ ঠিকই বৃদ্ধি করে। বর্তমানে ন্যূনতম মাসিক চার্জ ১০৫ টাকায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে যোগ করে মিটার ভাড়া প্রতিমাসে ১০ টাকা। অর্থাৎ গ্রাহকরা মিটার কিনে নিলেও এর জন্য প্রতি মাসে তাদের ১০ টাকা দেয়া লাগবে। এসব অনিয়ম এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ পেতে গ্রাহকরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল। কিন্তু তাদের প্রতিবাদের কোনো তোয়াক্কাই করেনি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। ফলস্বরূপ গ্রাহকরা গড়ে তোলেন পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি। যার আহ্বায়ক মনোনীত হন কানসাটের পুকুরিয়া গ্রামের গোলাম রাব্বানী। যিনি একসময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চেয়ারম্যান ছিলেন। এরপর কমিটির ব্যানারে প্রতিবাদ জানিয়ে আসতে থাকেন গ্রাহকরা।
৪ জানুয়ারি এরকমই প্রতিবাদ জানাতে পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ শেষে হাজার হাজার গ্রাহক বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি অফিসের সামনে যাবার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয় এবং তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে গ্রাহকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা সমিতি অফিস লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছুড়লে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে দু’জন নিহত হয় এবং আহত হয় শতাধিক।
দানা বেঁধে ওঠা ক্ষোভ সেদিনই বিক্ষোভে পরিণত হয় দু’জন মারা যাবার পর। কিন্তু কিছুদিন পর ঈদুল আজহা হওয়ায় সে বিক্ষোভ আর বেশিদূর এগোতে পারেনি এবং মিডিয়াতে এ নিয়েও বেশি হইচই হয়নি।
এরপরের ঘটনাগুলো মিডিয়ার কল্যাণে সকলেরই জানা। কাজেই নতুন করে আর বলার কিছু নেই। তবে কানসাটের ঘটনা একটা বিষয় প্রমাণ করে, সরকারের প্রশাসন তথা পুলিশের ঔদ্ধত্য এমন জায়গায় গিয়ে ঠেকেছে যে, এখন পুলিশ জনতার ওপর গুলি চালাতে ভয় পায় না। ৪ জানুয়ারি ২ জন এবং পরবর্তীতে ২৩ জানুয়ারি ৮ জনকে গুলি চালিয়ে হত্যা করলেও এ নিয়ে না প্রশাসনের, না সরকারের মাথাব্যথা লক্ষ করা যায়। সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকেও সেদিন ঘটনাস্থলে ছুটে যেতে দেখা যায়নি। দেখা যায়নি ঘটনা সম্পর্কে সরকারি কোনো বিবৃতি। সরকারের ভাবটা এমনই ছিল যেন কিছুই ঘটেনি। তবে স্থানীয় সরকার সমর্থকরা এ ঘটনাকে আরেকটি দলের ইন্ধনেই সৃষ্টি বলে চালাবার চেষ্টা করে। আর আন্দোলনকারীরা এ ঘটনার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যকেই দায়ী করে এবং তাঁর ফাঁসির দাবিতে শ্লোগান দিয়ে মিছিলও করে। কাজেই বোঝা যায়, সরকারে যারা আছেন তাঁরা এ ব্যাপারে কতটা আন্তরিক ছিলেন?
কানসাটের জনতা হয়তো এতটা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠতো না যদি পুলিশ পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে গিয়ে জনতাকে লক্ষ করে বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ (পুলিশ সুপারের বক্তব্য অনুযায়ী ১৫৪ রাউন্ড রাইফেলের গুলি এবং ১১টি টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছিল। পুলিশ সুপারের এ পরিসংখ্যানই বলে দেয় বাস্তবে কতটা গুলি ছোড়া হয়েছিল?) এবং নারী-শিশুর ওপর নির্বিচারে নির্যাতন না করতো। তাহলে পরিস্থিতি হয়তো এতটা ভয়াবহ হয়ে উঠতো না। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, পুলিশ কি করে সমিতি অফিস থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে গিয়ে শান্তিপূর্ণ মিছিলে গুলি চালাতে পারে?
বিদ্যুৎ সেক্টরের অবস্থা এ দেশের মানুষ অনেক আগে থেকেই অবগত। পিডিবিকে লস প্রজেক্ট দেখিয়ে একের পর এক বিদেশি কোম্পানির হাতে বিদ্যুতের দায়িত্ব তুলে দেয়া হয়েছে। সেসব কোম্পানি কতটা লাভজনক এক পল্লী বিদ্যুতের দিকে তাকালেই স্পষ্ট হয়। শোনা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎও লসের মধ্যে আছে। বলাবাহুল্য, লুটপাটের কারণেই এ লস। আর এ লস ঠেকাতে তারা বেছে নেয় তাদের গ্রাহকদের। এর বড় নমুনা মিটার কিনেও গ্রাহককে প্রতি মাসে মিটার ভাড়া দিতে বাধ্য করা। শুধু তাই নয়, কোনো কারণে মিটার নষ্ট হলে গ্রাহকের কাছ থেকে কয়েক গুণ বেশি টাকা আদায় করে নেয়া হয়।
কানসাট আন্দোলনের যবনিকাপাত ঘটেছে কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না। পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়কসহ তিনজনকে গ্রেফতার করার ঘটনা নিয়ে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত যা ঘটেছে, তার সবই পত্রিকাতে এসেছে। জনতার বিক্ষোভের মুখে ৩১ জানুয়ারি গ্রেফতারকৃত সকলকে মুক্তি দেয়া হয়। মুক্তির পরপরই কমিটির আহ্বায়ক গোলাম রাব্বানী বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকারে বলেছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
সাক্ষাৎকারে গোলাম রাব্বানী এও বলেছেন, তিনি জামিন পেয়ে জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। সরকার থেকে এক মাসের সময় নেয়া হয়েছে। অর্থাৎ ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সকল দাবি মেনে নেয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। প্রশ্ন করা যায়, গোলাম রাব্বানীসহ গ্রেফতারকৃতদের জামিন দিতে যদি ৯ দিন লেগে যায় সেখানে সকল দাবি-দাওয়া ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মেনে নেয়া হবে কীভাবে? এজন্য আমাদের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আমরা চাইবো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আন্দোলনকারীদের উল্লিখিত দাবি মেনে নেবেন। ওই দাবি না মেনে বা নানা টালবাহানা করে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ করে তোলা কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন